আমি এবং চড়ুই পাখি.

দুইটি কথা একসাথে বলব। বলব বলতে লিখে প্রকাশ করছি।একটা বর্তমানে চলমান বিতর্ক নিয়ে আরেকটি আমার চিন্তাধারা নিয়ে।
#১
আমি নিজেকে মাঝে মধ্যে লুজার বা কুইটার বলে থাকি।বলি আই কুইট।অনেকেই প্রশ্ন করে যে “তুই তোর বর্তমান পজিশনে থেকেও যদি বলস তুই লুজার তাহলে আমারা কি?এই সব ফালতু কথা বাদ দে......শোকর কর যা আসোত”।

না.........আমাকে আল্লাহ্‌ যে অবস্থানে রাখসে আলহামদুলিল্লাহ্‌।আল্লাহ্‌ আমাকে অনেক কিছু দিসে। দুই হাত ভরেই দিসে।  আমি একজন সফল প্লেয়ার হওার চেয়ে একজন সফল প্ল্যানার হতে চেয়েছি এবং সব সময় চাই। প্লেয়ার এর ভাল করতেই হবে এই রকম একটা চাপ সবসময়ই থাকে, কিন্তু প্ল্যনার তার মত প্ল্যান করবে। ভুল হলে এক কাটা দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিবে। কোন চাপ নেই।

আমার প্ল্যান যদি ভুল হয় তাহলে ওকে আই অ্যাম লুজার অ্যান্ড কুইটার বোথ। বাট আমি আবার প্ল্যান করব। আবার ভুল হলে ছিঁড়ে ফেলে দিব। কিন্তু একজন প্লেয়ার তা পারবে না। তাকে তার সামর্থ্যের প্রমাণ প্রতিবার দিতে হয়। ভুল একবার দুইবার ক্ষমা করা হয় বারবার না।

কিন্তু আমি বলি যে নেভার গিভ আপ(জন সিনার থিম)।কারণ প্ল্যানার হিসেবে থাকলে ভুল শোধরানোর সুযোগ বারবারই থাকে। তাই বলে এইনা যে বারবার ভুল করব। ভুল গুলোকে রাবার দিয়ে মুছে দিলেই হয়।কারন প্ল্যানার এর প্ল্যান ত পেন্সিলেই আঁকা।

তাই আমার নিজের ভুল প্ল্যানের জন্য যদি আমি লুজার বা কুইটার হই। তাহলে আমি একজন লুজার বা কুইটার হতেই পছন্দ করব।

#২
আমাদের বাসার ঘুলঘুলিতে চড়ুই পাখির বাসা আছে।আমি নিজেই আমার ছোট ভাই সহ বারান্দার ঘুলঘুলিটা হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে পাখির বাসা বানানোর জন্য এই কাজ করি।কারণ দেখতাম।পাখির খুব কষ্ট হয় ঐ ফাঁকফোকর দিয়ে বাসা বানাতে।এই কাজটি যখন করি তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি আর আমার ছোট ভাই ফাইভে। আজকে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ি আর আমার ভাই নটরডেমিয়ান। অনেক চড়ুই পাখি আসলো গেল। তাদের ৫ম-৭ম জেনারেশন এখনো চলছে।

যেটা এই কয়েক বছরে অবযারভ করলাম যে চড়ুই পাখির বাচ্চা ততদিনই কিচিরমিচির করে যতদিন তাদের খাবারের প্রয়োজন হয় তারা উড়তে পারে না। আমি খুব দুষ্ট ছিলাম। ঐ ঘুলঘুলিতে হাত ঢুকিয়ে মাঝে মধ্যে হাত ঢুকিয়ে বাচ্চা বের করে দেখতাম। দুর্বল বাচ্চা তখনো চোখ ও ফুটে নাই।দুই একবার দেখসি ছোট থাকতে আর ধরি নাই পরে।

মা চড়ুই পাখি বাচ্চা চড়ুই পাখি কে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে খাবার খাওায়।মা কিভাবে বুঝলাম? কারণ বাবা চড়ুই পাখি ঘর বানাতে ব্যস্ত থাকে আর পাহারা দিতে।এই দিকে তার নজর থাকে না।কিন্তু যেই দিন বাচ্চা পাখি উড়তে শিখে যায়,সে আর বাবা মার অপেক্ষা না করে সেই ঘুলঘুলি শূন্য করে উড়াল দিয়ে নীল আকাশে হারিয়ে যায়।

পরবর্তীতে ঐ চড়ুই দম্পতির আর কি হয় টা আমার আর জানা হয় না।আবার নতুন চড়ুই দম্পতি আশে,তাদের ঘর থেকে কিচিরমিচির শব্দ আশে,তারপর আবার নীরবতা। এই ভাবেই চলতে থাকে.................................


আমারা মানুষরাও দিন দিন চড়ুই পাখি হয়ে যাচ্ছি না তো ???


©মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল

Comments

Popular posts from this blog

স্মৃতি

মনের আকাশে মেঘ

এত তিতা লাগে কেন?