প্রলাপঃ মানবজীবনের রসায়ন
একটু রসায়ন কপচাই। বইয়ের জ্ঞানের সাথে না, মানবজীবনের সাথে।
আমরা সবাই কমবেশি পৃথিবীতে থাকা কিছু ভাইটাল
গ্যাস সম্পর্কে [যারা অন্তত বিজ্ঞানের সাথে অল্প পরিচিত আছি] জানি। বলব কার্বন ডাই
অক্সাইড(CO2) , অক্সিজেন (O2), হাইড্রোজেন (H2) গ্যাসের কথা। তাদের বিভিন্নতা
চর্মচক্ষে ধরা পরে আগুনের সংস্পর্শে আসলে।
O2 নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে
সাহয্য করে।
CO2 নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকেও
জ্বলতে সাহয্য করে না।
H2 নিজে জ্বলে কিন্তু অন্যকেও জ্বলতে
সাহয্য করে না।
হয়ত আগুন না থাকলে তাদের পার্থক্যটা এত সহজে
সবাইকে বোঝাতে কষ্ট হত। আমাদের আশেপাশেও এই রকম মানুষের দেখা পাওয়া যায়। আগুনটা
হচ্ছে স্বপ্ন দেখার মন-মানসিকতার রূপক।
এখন বলছি একজন প্রায় নিস্ক্রিয় গ্যাসের কথা।
হ্যাঁ নাইট্রোজেন (N2) এর কথাই
বলছি। পর্যায় সারণীর গ্রুপ ১৮ বা জিরো গ্রুপের নিস্ক্রিয় মৌল গুলোকে বাদ দিলে
তারপর যে প্রায় নিস্ক্রিয় গ্যাস পাওয়া যায় সে হল N2 । এই N2 গ্যাসই বায়ুমণ্ডলের সিংহভাগ নিজের দখলে রাখে। পাঁচ
রকমের পরিবর্তনশীল জারণ অবস্থা প্রদর্শন করে। এই N2
টাইপের মানুষগুলা একটু কেমন যেন। কখনো বজ্রপাতের কারণে বায়ুমন্ডল থেকে মাটিতে নেমে
এসে শক্তিশালী নাইট্রিক এসিড (HNO3) তৈরি করে ফেলে আবার
কখনো বায়ুমণ্ডলেই একাকী থাকে। এই মানুষগুলো অদ্ভুত হয়। যদিও সবার সাথেই কেমন করে
যেন কিছু করে ফেলে। আবার সবার মাঝে থেকেও একাই থাকে।
আমাদের আশেপাশের O2 মানুষগুলার জন্যই এখনো আমারা টিকে আছি। তারা নিজেরা না
জ্বলে অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে থাকে। CO2 টাইপের
মানুষগুলাও একপ্রকার স্বার্থপর। কিন্তু তারা কারো উপকার করতে না পারলে অন্তত অপকার
করে না। কারণ CO2 আগুনকে বরং নিভিয়ে দেয়। কিন্তু সমাজে CO2 বা O2 টাইপের মানুষগুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় H2 টাইপের মানুষগুলার জন্য। কারণ তারা স্বার্থপর, তারা নিজেরাই জ্বলতে চায়। বাদ বাকিদের কি হবে তা নিয়ে তাদের মাথাব্যাথা
নেই। তারা সূর্যের মত দীপ্তিমান। তারা তার জন্য আগে সেইভাবেই জ্বলেছে। তাদের তো
কেউ জ্বলতে সাহয্য করে না। তাই তারা অন্যকেও করে না। পর্যায় সারণীতে অধাতু হয়েও H
নাম্বার ওয়ান পজিশনেই আছে। সব ধাতুদের উপরেই তার অবস্থান।
ভালো থাকুক CO2 , O2
, H2 , N2 টাইপের সবাই। স্বপ্ন দেখুক বা না দেখুক, দেখাক বা না দেখাক। সবাই ভালো থাক।
#MIKParadox
Comments
Post a Comment