ফাহাদ ও মৎসকুমারীর গল্প( শেষ পর্ব )

                                             ।
সর্দিতে মাখামাখি অবস্থা।
মোছার জন্য মনের অজান্তেই পকেটে হাত দিল ফাহাদ। পেয়ে গেল খাদিজার দেয়া টাওয়েল।মনে পরল খাদিজকে নতুন টাওয়েল দিবে বলে কথা দিয়েছিল।
-কি হল??? চল সূর্য ওঠার বেশি দেরী নেই।
-না আমি যাব না। আমি যদি চলে যাই তাহলে আর কখনো সকালে উঠে সূর্য কে বলতে পারব না গুড মর্নিং মামা। তোমার মত সূর্যকে ভয় পেয়ে থাকতে হবে। আমার আব্বু হয়ত আমাকে বকা দিয়েছে কিন্ত উনি আমাকে হাতে ধরে ছোটবেলায় হেঁটেছেন। হোঁচট খেলে তুলে নিয়ে আবার আদর করেছেন। কান্না করায় চোখের পানি মুছে ললিপপ কিনে দিছেন। আর আম্মু!!!! উনি তো এখনো আমাকে মুখে তুলে ভাত খাইয়ে দেন যদি আমি ভাত না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
- বাহ্!!! সিধান্ত পরিবর্তন করে ফেললে এতো তাড়াতাড়ি? এখন ভালো লাগে সূর্য মামা,আব্বু-আম্মু??
- আর আমি হয়ত কিছু পারি বা না পারি তবে কথা দিয়ে কথার বরখেলাপ করি না। আমি তোমার সাথে যেতে পারব না। আমাকে আগের জায়গায় নিয়ে চল।
-তোমার মত ছেলে আগের কখনো দেখি নি। ভালো লাগলো তোমার সাথে দেখা হয়ে। আমার খারাপ লাগছে এই ভেবে যে তোমার মত একজন সাথী আমি হারালাম। সাগরের ঐ পার অনেক দূর। আমাকে ক্ষমা করে দিও।
হঠাৎ আবারো পিঠে জোরালো আঘাতের অনুভুতি পেল ফাহাদ। জ্ঞান হারালো।

হঠাৎ মুখের উপর পানির ছিটায় জেগে উঠল ফাহাদ। সূর্য উঠার বেশি দেরী নেই আকাশে লাল দাগ দেখা যায়।
-নাও তোমাকে দিয়ে গেলাম।পৃথিবীতে তোমার জীবন খুশিতে কাটাও। তোমার ভাগ্য যে তুমি মানুষ আমার মত অভিশপ্ত জীবন নেই। আর ব্যাথার জন্য মাফ করে দিও।
টুপ করে পানিতে ডুব দিল মৎস্যকুমারী। আর উঠল না। ভিজা কাপড় নিয়ে হোটেলে ফিরে এলো। কাপড় ছেড়ে শুকনো কাপড় পরে নিল। খুব শীত লাগছে ফাহাদেরতাড়াতাড়ি কম্বলের নীচে শুয়ে পড়লো।


                                             ।
-এই নে খাদিজা, এই যে তোর টাওয়েল।
- থ্যাঙ্কু ভেরি মাচ। সর্দি কমেছে?
- আল্লাহ্‌ এর রহমতে কমেছে। আর তোকেও ধন্যবাদ।
-কেন? আমি আবার কি করলাম?
-নাহ্,তেমন কিছু না
বন্ধুদের সাথে সাগরে নামতে গেল ফাহাদ। ডুবাডুবি করার জন্য গায়ের কাপড় খুলে ফেললো। খাদিজা জোরে ডাক দিল ফাহাদকে। সবাই ফাহাদকে দেখে অবাক হোল। সমুদ্রের গর্জনে হয়ত ফাহাদ খাদিজার ডাক শুনতে পেলনা।
ফাহাদের পিঠে একটা লাল V দাগ।ঠিক মাছের লেজের মত দেখতে।


Comments

Popular posts from this blog

স্মৃতি

মনের আকাশে মেঘ

এত তিতা লাগে কেন?