জীবন ক্যানভাস

আমাদের জীবনকে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে একটা মেটাফরিকাল গল্প আমার বলতে খুব ভালো লাগে।
জীবনটা দৈর্ঘ্য-প্রস্থর ছবি আঁকার সাদা ক্যানভাসের মত। আমরা এর মেজারমেন্ট টা জানি না। আমরা ক্যানভাসের হাতের বাম দিকের একেবারে শেষ (০,০) পজিশন থেকে ছবি আঁকা বা রঙতুলি দিয়ে রঙ করা শুরু করি।
বিধাতা আমাদের কে বিভিন্ন রকমের রঙের কালেকশন দিয়েছেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আমরা নিজেরদের রঙ দিয়ে কেউ নিজেদের ক্যানভাসে রঙ করতে পারবো না। সবসময় এই রঙগুলো অন্য কারো ক্যানভাসে রঙের জন্য। এইরকমভাবে সবাই অন্যদেরটা রঙ করলে সবার ক্যানভাস ই রঙিন হবার কথা। নিজের ক্যানভাসে তুলির আঁচড় দিতে হলে অন্যের থেকে পাওয়া রঙতুলির আঁচড়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে।
কেউ সরাসরি রঙ করে, কেউ পেন্সিলের আউটলাইন করে তাতে রঙ ব্যবহার করে। কারো ক্যানভাস সাদাকালোই রয়ে যায়। কারো একেবারেই সাদা। কারো বাহারি ডিজাইন, কারো বাহারি রঙের সমাহার।
এই নিজের ক্যানভাসকে রঙ এ রঙিন করতে করতে কেউ কেউ জীবনের প্রস্থ পর্যন্ত চলে যায়। তখন জীবনের দৈর্ঘ্য বরাবর সে আঁকতে থাকে। ক্যানভাসের পঁটে ছবি আমার কিন্ত তুলির আঁচড় অন্যের!
ব্যাপারটা এমনি দাঁড়ায় যে, অন্যে আপনার ক্যানভাস রঙ করে দিবে, আপনি অন্যের করে দিবেন। আমরা রঙ নিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। অন্যের ক্যানভাস রঙ করে দেয়ার জন্য। আমাদের ক্যানভাস অন্যের রঙ করে দেয়ার জন্য।
কি অদ্ভুত! নিজের কাছে এতো রঙ থাকতেও নিজের জন্য রঙ করার অনুমতি নেই! আমরা সবাই একে অন্যের ক্যানভাসে তুলির আঁচড় দিয়ে যাচ্ছি। রঙিন করে যাচ্ছি একে অন্যকে নিজেদের বিভিন্ন রকমের রঙের মাধ্যমে।
এখন এই ক্যানভাসের প্রথমে প্রস্থ মাপার পর দৈর্ঘ্য একটা সময় আমরা মেপে ফেলি। তখন আমরা অপেক্ষা করি, সবার তুলির আঁচড়ে নিজের সাদা ক্যানভাসের শেষ হবার। আমরা তাড়াহুড়ো করি নিজের ক্যানভাসে অন্যের শেষ তুলির আঁচড় পড়ার আগে যার যত ক্যানভাসে রঙ করে যাওয়া যায় করে যাওয়ার।
শেষ হয়ে যাওয়া ক্যানভাস রয়ে যায় পৃথিবীতে। কম্পপ্লিট ক্যানভাস। কমবেশি রঙিন থাকে সবার। কারো কত বেশি রঙিন, কারো কত বৈচিত্র্যময় ক্যানভাস। রঙ হয়ত হাতে গোণা কয়েক রকম। কিন্তু সেই রঙের উপস্থাপন গুণে শেষ হয় না। হরেক রকমের বাহারি ডিজাইন আর থিম।
#জীবন_ক্যানভাস
#MIKParadox

Comments

Popular posts from this blog

স্মৃতি

মনের আকাশে মেঘ

এত তিতা লাগে কেন?