স্বপ্রণোদিত ভাবনা-১

অলস মস্তিষ্কের কিছু স্বপ্রণোদিত ভাবনাঃ

১) মানুষ পরিবর্তনশীল,তাদের চিন্তা ধারাও। মানুষের চিন্তা ধারা অপরিবর্তিত থাকে, মানুষ নিজেও। ক্ষেত্র বিশেষে যে কোন একটি যেমন ঘটে, আবার যুগপৎ ও ঘটে।

২) কামারের কাছে লোহার মূল্যায়ন ঠিক ততটুকুই যতটুকু জহরে টুকরোর জহুরীর কাছে। জহুরীর কাছে লোহার টুকরো হয়ত মূল্যহীন কিন্তু কামারের কাছে জহর কখনোই মূল্য হারায় না।

৩) "আপনি ভাল মানুষ হলেই পুরো জগৎবাসী আপনার সঙ্গে ভাল
ব্যবহার করবে এমনটা আশা করা ঠিক নয়। আপনি নিরামিষভোজী হলে কি কোন ষাঁড় আপনাকে তাড়া করবে না?" এটা একজন জ্ঞানী ব্যক্তির বক্তব্য।

৪) কিছু ব্যপার কখনোই ব্যাখ্যা করা যায় না এবং মানুষ করতেও চায় না। কারণ অন্য কেউ সেটা বুঝবেও না তাই ব্যাখ্যা না করাই ভালো। সবাই একই মতাদর্শের যেমন না তেমনি তারা মতাদর্শে অভিন্ন হলেও ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন।

৫) আমাদের ব্যবহার আমাদেরকে ঠিক যেভাবে কাছে টেনে আনে, ঠিক সেইভাবেই আবার দূরেও ঠেলে দিতে পারে। পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করে তৎকালীন ব্যক্তিগত মন মানসিকতার উপর।

৬) যারা খেলতে আসে বা অভিনয় করতে আসে তারা জানে যে বয়স এবং ফিটনেস ফ্যাক্ট এখানে। কোম্পানি তাকেই স্পন্সর করে বা এম্বাসেডর বানায় যারা সফল থাকে। যাদের নামের উপর ভিত্তি করে কোম্পানি ব্যবসা করবে। সময় যায় বিল বোর্ড থেকে নিজের নামও পরিবর্তন হয়ে যায়, নতুন নাম আসে। পরিবার কখনো আবেদন হারায় না। আমরাই হয়ত পরিবারের আবেদন হারিয়ে ফেলি।

৭)আমাদের অর্জন সাময়িক, তবে অর্জন অনেক কষ্টলব্ধ। অর্জনের গর্বে গর্বিত হতে কোন লজ্জা নেই। আমাদের স্মৃতি আমাদের অন্যতম সম্পদ যদিও সে বড়ই প্রতারক। তবুও আমরা সেটা জেনে শুনে বুঝেই স্মৃতিকে আগলে রাখি। আমাদের কোন সিদ্ধান্তই ভুল হতে পারে না যদি না আমরা সেখান থেকে কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চার করে থাকি।

৮) দিন শেষে সব সম্পর্কই "স্বার্থপর"। যদিও কিছু সম্পর্কে "নিঃস্বার্থ" মাঝে মাঝে পাল্লা দিয়ে "স্বার্থপর" শব্দটা মুছে ফেলতে পারে। একটি সংকলিত উপকথা দিয়ে শেষ করবো।
"এক দ্বীপে থাকত একটি বানর, আর দ্বীপের চারপাশের পানিতে বাস করত এক রঙিন মাছ। দুজনের খুব বন্ধুত্ব, দুজন দুজনকে ভালোবাসত, মঙ্গল কামনা করত। মাছ বানরকে পানির তলা থেকে এনে দিত রঙিন পাথর আর বানর মাছকে দিত ডাঙার ফুল ও ফল। একদিন শুরু হলো তুমুল ঝড় আর বৃষ্টি। ঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে বানর আশ্রয় নিল গাছের কোটরে আর বৃষ্টি পেয়ে উৎফুল্ল মাছ লাফাতে লাগল পানির বুকে। গাছের কোটর থেকে মাছের এই লম্ফঝম্প দেখে বানর ভাবল, মাছটি বোধহয় ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ডাঙায় আসার চেষ্টা করছে। বানর তখন নিজের জীবন বিপন্ন করে ঝড়ের ভেতর পানিতে নেমে মাছটিকে ধরে এনে গাছের কোটরে পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে দিল। ডাঙায় খাবি খেতে খেতে মাছটি লেজ ঝাপটাতে লাগল, বানর তখনো ভাবল মাছটি খুশিতে লেজ ঝাপটাচ্ছে। এভাবে লেজ ঝাপটাতে ঝাপটাতে মাছটি একসময় নিথর হয়ে গেল।
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব, বন্ধুকে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রবল চেষ্টা—কোনোটিই মাছ আর বানরকে কাছাকাছি রাখতে পারল না।"
বন্ধুত্বের সম্পর্কে যখন কোন স্বার্থ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে তখন বন্ধুত্ব অটুট থাকলেও আগের মত থাকে না।

৯) এটা বোনাস :D বই পড়ে লেখককে কতটুকু জানা যায় তা জানা নেই, তবে লেখককে পড়তে পারলে বই সম্পর্কে ঠিকই জানা যায়।
আমি খুব ভাগ্যবান যে আমি অনেক মানুষদের সান্নিধ্যে অনেক কিছু শিখেছি,এখনো শিখছি, আরো শিখবো সামনে। তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ দেই মনে মনে, সামনে,পিছনে।
জীবন বড়ই বিচিত্র, আরো বৈচিত্রময় তার চলার গতি। জীবন সুন্দর, মাশাআল্লাহ্‌ 😇

Comments

Popular posts from this blog

স্মৃতি

মনের আকাশে মেঘ

এত তিতা লাগে কেন?